এ,কে,এম,শফিকুলআলম-
বঙ্গবন্ধু হত্যাকান্ডের বিচার নিয়ে- যত প্রহসন হয়েছে আমার জানামতে পৃথিবীর আর কোন ঘটনার বিচার নিয়ে এ ধরনের প্রতিবন্দকতা সৃষ্টির অপপ্রয়াস আর হয়নি। আইনে Natural justice নামে একটা কথা আছে অনেক সময় সাক্ষ্য প্রমান দ্বারা সুপ্রতিষ্ঠিত করতে অক্ষম হওয়া সত্ত্বেও কোন ব্যক্তি ন্যায় বিচার প্রাপ্ত হয়। সেটাকে বলা হয় Natural justice বা প্রকৃতির বিচার। বিচার ব্যবস্থার শ্রেণী বিভাগ আছে। বিচারালয়েরও শ্রেণী বিভাগ আছে। হয়তো ভাবতে পারেন জর্জ কোটর্, হাই কোটর্, সুপ্রিম কোট আমি সে সমনত্ম আদালতের কথা বলছি না। আমি বলছি আদালত বলতে আইনের আদালত, ইতিহাসের আদালত এবং জনতার আদালত। আইনের আদালতের বিচারক বিব্রত বোধ করতে পারেন কিন্তু ইতিহাসের বিচারক বিব্রত বোধ করেন না। জনতার আদালতে বিব্রত হওয়ার কোন নজির নাই। বঙ্গবন্ধুকে যারা হত্যা করেছিল সে কাপুরুষেরা ভেবেছিল তারা আইনের আদালতে বিচার হতে দেবে না। সেই কারনে তারা (Indemnity) অধ্যাদেশ জারি করে বিচারের পথ রুদ্ধ করে ছিল। কিন্তু মূর্খরা জানে না (Indemnity) করে আইন আদালতের বিচার কে প্রতিহত করা যায়। কিন্তু ইতিহাসের বিচারকে এবং জনতার বিচারকে প্রতিহত করা যায় না। বঙ্গবন্ধুকে স্বপরিবারে হত্যার পর তিনি এবং তার পরিবার সর্ম্পকে নেতিবাচক প্রচারনা চালানো হয়েছিল। তাকে ইতিহাসের খল নায়ক হিসাবে চিন্হিত করার নিরন্তর ব্যর্থ প্রয়াস চালনা হয়েছিল। ভাড়াটে বুদ্ধিজীবিরা চটকদারী মিথ্যার বেসাতী সাজিয়ে বসেছিল। কিন্তু ইতিহাসের নির্মোহ বিচারে বঙ্গবন্ধু নায়ক হিসাবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছেন। অন্যদিকে তার হত্যার সাথে প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষ ভাবে জড়িত কর্নেল রশিদ, ফারুক, ডালিম, মসত্মাক এবং জিয়ারউর রহমানরা ইতিহাসের আস্তাকুড়ে নিক্ষিপ্ত হয়েছে। বঙ্গবন্ধু হত্যার বেনিফিশিয়ারী জিয়াউর রহমান তার নিজের হত্যাকে ও রোধ করতে পারেননি। যে দামে কেনা, সেদামেই বিক্রি মাঝ খানে ইতিহাস টুকু শুধু বিকৃত। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার মধ্য দিয়ে আমাদের মুক্তিযুদ্ধের অর্জন, চার মূলনীতিকেও হত্যা করা হয়। বঙ্গ বন্ধুকে হত্যা তো কেবল মাত্র বঙ্গবন্ধুকে হত্যা নয়। গোটা মুক্তিযুদ্ধকে হত্যা করা। গোটা জাতীকে আদর্শ চুত করা। বঙ্গ বন্ধু নিহত হওয়ার পর একে একে নিহত হলো বাঙ্গালী জাতীয়তাবাদ, ধর্ম নিরপেক্ষতা, সমাজ তন্ত্র এবং গলা টিপে ধরা হলো গনতন্ত্রকে কিন্তু জনতার বিচারে বেশিদিন এই মিথ্যা রাজত্ব করতে পারেনি। বিগত ২৯ শে ডিসেম্বর ২০০৮ নির্বাচনে জনতার সঠিক জায়গায় রায় দিতে ভুল করে নাই। ইতিহাসের এবং জনতার রায়ে (ন্যাচারাল জাষ্টিস) প্রকৃতির বিচার সম্পূর্ন হয়েছে। যার যতটুকু প্রাপ্য সে তা পেয়েছে। জনতার রায়ে নির্বাচিত সরকার আদালতের বিচার সম্পূর্ন করেছে। রায় কর্যকর করতে আর আমাদেরকে অপেক্ষা করতে হবে না।